শিলিগুড়ি বার্তা ওয়েব ডেস্ক,১১ই ফেব্রুয়ারি:
জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিক ছিল ৪৭বছরের গনেশ মান্ডি। আর সেটা ছিল যতই মাতাল হোক না কেন রাতে নিজের পোষ্য কুকুরটির পাশে ঘুমোনো । সেই কুকুরটাই বাঁচিয়ে দিল গনেশকে । গনেশের স্ত্রী সমেত বাকি ৩জন পুড়ে মারা গেল ভয়াবহ আগুনে। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল থানা এলাকার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাটালের শ্যাওড়াগেড়িয়া এলাকায় একটি পরিত্যক্ত এলাকায় বসবাস করে কিছু শ্রমিক পরিবার। খড়ের চালা , খড়ের দেওয়াল বানিয়েই তারা থাকে । সেই রকম একটি ঘরে থাকত সান্তোস দাস ও সুন্দরী মুরমু। দুজনেরই আলাদা সংসার থাকলেও তা ছেড়ে এখানেই এক সঙ্গে থাকত তারা । পাশের আরেকটি ঘরে থাকত গনেশ মান্ডি ও তার স্ত্রী শ্রীমতি ।
রবিবার সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী কুঠিঘাট লাগোয়া এলাকায় শ্রীপঞ্চমীর মেলায় গিয়েছিল চারজন।সেখানেই খাওয়া দাওয়ার পর আকণ্ঠ মদ পান করে চারজনেই । পরে বাড়ি ফিরে আবারও সান্তোসের কুঁড়েতে বসে চারজন । আবারও মদ পানের পর সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে চারজন ।
পুলিশকে দেওয়া গনেশের বয়ান অনুযায়ী , চারজনই সান্তোসের ঘরে ঘুমোলে, তার নিজের ঘর থেকে পোষা কুকুরটিও এসে তার পাশেই শুয়ে পড়ে । রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ এই কুকুরের টানাটানিতে ঘুম ভেঙে যায় তার । গোটা ঘর তখন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ।
ঘরের বাইরে এসেই গনেশ দেখে গোটা ঘরটাই দাউ দাউ করে জ্বলছে কিন্তু বাইরে কেউ নেই । তার চিৎকারে ছুটে আসে আশেপাশের লোকেরাও । আগুন নেভানোর চেষ্টাও হয় কিন্তু আগপাশতলা খড়ের ঘর ততক্ষনে পুড়ে ছাই । আর সঙ্গে মদে অচেতন অন্য তিনজন ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের ভেতরে থাকা কেরোসিন লম্ফ উল্টে গিয়েই সম্ভবত এমনটা হয়েছে । এলাকায় ফরেনসিক দল যাচ্ছে ।
রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ঘাটাল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক দেবাংশু ভৌমিক , ঘাটালের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কল্যান সরকার সমেত পুলিশ বাহিনী । মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে গনেশকে থানায় নিয়ে আসা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য । এক পুলিশ কর্তার ভাষায় , '' আমরা যখন গনেশকে নিয়ে আসছি তখনও গনেশের পিছু পিছু অনেকটাই এসেছিল কুকুরটা । গনেশও বলল , ''একটু তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবেন স্যার ,আমি না থাকলে বেচারা খাবেইনা''
Comments System WIDGET PACK